মোঃ কামাল হোসেন,বিশেষ প্রতিনিধিঃ
যৌতুকের টাকা না পেয়ে যশোরের অভয়নগরে দিয়াপাড়া গ্রামের স্বামী জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্ত্রী আজমিরা খাতুনকে (২৬) নির্যাতন করে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার দেয়াপাড়া এলাকার জব্বার মোল্লার বাড়ি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।নিহত ওই নারী রাজঘাট জাফরপুর এলাকার শামসুল রহমানের মেয়ে। তার একটি কন্যাসন্তান ৫ বছরের মেয়ে মাওয়া আছে। যৌতুকলোভী স্বামী জাহিদুল ইসলাম দিয়াপাড়া গ্রামের জব্বার মোল্লার ছেলে।এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত ঐ নারীকে তার স্বামী গত কয়েকদিন ধরে তাকে বাবার বাড়ি থেকে কয়েক ৫০ হাজার টাকা যৌতুক আনার দাবি করে আসছিল স্বামী জাহিদুল ইসলাম ।
কিন্তু যৌতুকের টাকা আনতে অস্বীকার করায় রাতে স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। এবং লাশ নিয়ে নাটক করতে থাকে। স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে খবর পেয়ে অভয়নগর থানা পুলিশ শনিবার বিকাল তিনটায় নিহতের লাশ উদ্ধার করে।পরে লাশ ময়না তদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। নিহত আজমিরার মা মেহেরুন্নেসা বলেন, আমাদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে অনেকবার ওই জামাই টাকা চাওয়ার জন্য মেয়েকে আমাদের বাড়িতে পাঠাই। আমার মেয়ে আজমিরা খাতুন নিহত হওয়ার আগে তার স্বামী নির্যাতন করে। পরে মেয়ে আমার বাড়িতে আসে। আসার পরে মেয়েটিকে আমরা বুঝিয়ে ঐদিন আবার গনমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়। যাওয়ার ২ ঘন্টা পরে তাকে নির্যাতন করে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজমিরার বাবা শামসুর রহমান বলেন, আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।
আমি এর বিচার চাই। প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে জানাই মেয়ের মাধ্যমে যৌতুকের জন্য চাপ দেয় এবং পর্যায়ক্রমে ৩৫ হাজার টাকা, ৪০ হাজার টাকা, ইট ও টিন বাবদ ৬০হাজার টাকা, নাতি মাওয়া জন্ম গ্রহণের সময়ে ২৬ হাজার টাকা, তার ঘরের আসবাবপত্র কিনতে ৩০হাজার টাকা নেন। নিহত আজমিরার মামা শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি যেয়ে দেখি আজমিরা মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। যে কারণে থানা পুলিশ লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। রবিবারে লাশ মর্গে থেকে হস্তান্তরের পর আমরা রাজঘাট গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পন্ন করেছি। রিপোর্ট হাতে আসার পরে মামলা দায়ের করার কথা বলেছে অভয়নগর থানা পুলিশ। এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে পাথালিয়া ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) শামসুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।অভয়নগর থানার তদন্ত ওসি মিলন কুমার মন্ডল বলেন,আমি নিজে এই ঘটনায় পরিদর্শন করেছি। দিয়াপাড়া গ্রাম থেকে আজমিরার লাশ উদ্ধার করা হয় এবং ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলেই বোঝা যাবে হত্যা না আত্মহত্যা।একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে মামলা নাম্বার ৩৫।
Leave a Reply