গাজীপুর জেলার শ্রীপুরে খাটের সঙ্গে স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে ও মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে হৃদয় (২২) নামের এক যুবকের আত্মহত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড গ্রামের মসজিদ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হৃদয় (২২) মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার পারিঘাটা গ্রামের পিঞ্জর মিয়া শাহিনের ছেলে। প্রায় দুই যুগ ধরে হৃদয়ের বাবা শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের নুরুল চেয়ারম্যানের বাড়ি এলাকায় বসবাস করছেন। সেখানে তাঁদের কাপড়ের ব্যবসা আছে।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এনায়েত কবির বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহতের স্বজন ও স্থানীয় স্বজনেরা জানান, প্রায় চার মাস আগে আর্জিনার সঙ্গে হৃদয়ের বিয়ে হয়। তাঁদের বিয়ের বিষয়টি গোপন ছিল। আর্জিনা হলেন হৃদয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী। বিয়ের পর হৃদয় পৌরসভার মসজিদ মোড় এলাকার আফাজ উদ্দিনের বহুতল ভবনের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। আর্জিনার বাবার বাড়ি শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নে।
গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কাপড়ের দোকান থেকে ভাড়া বাড়িতে আসেন হৃদয়। কিছুক্ষণ পর তিনি আবার দোকানে চলে যান। আধা ঘণ্টা পর এসে দরজা বন্ধ করে দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে হাসিঠাট্টা করেন। এরপর চলে গিয়ে রাতে বাসায় ফিরে হৃদয় প্রথমে আর্জিনার বাঁ হাত, পরে ডান হাত খাটের সঙ্গে বাঁধেন এবং দুই পা বেঁধে মুখে কাপড় গুঁজে দিয়ে আত্মহত্যার জন্য ঘরে ফ্যানের হুকে ওড়না লাগাতে থাকেন। এ সময় চিৎকার শুরু করলে আর্জিনার মুখের ভেতর গুঁজে দেওয়া কাপড় বের হয়ে এলে ফের মুখে গেঞ্জি গুঁজে দেন হৃদয়। এরপরই হৃদয় ফ্যানের হুকে ওড়না লাগিয়ে ঝুলে পড়েন। পরে আর্জিনার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে ঘরের দরজা ভেঙে হৃদয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান, আর্জিনাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হৃদয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে বলে জানায় পুলিশ।
নিহত হৃদয়ের নানা এমরান হোসেন জানান, ‘মোহনা নামের আগে আরেক স্ত্রী আছেন হৃদয়ের। দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।’ তবে কেন, কী কারণে হৃদয় আত্মহত্যা করতে পারেন তা তিনি জানাতে পারেননি।
দ্বিতীয় স্ত্রী আর্জিনা বলেন, ‘আমি জানতাম হৃদয়ের আগের এক স্ত্রী আছে। সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি তা মেনে নিয়ে বিয়ে করি।’ কী কারণে হৃদয় কেন আত্মহত্যা করলেন তা জানাতে পারেননি আর্জিনা।
Leave a Reply